২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতার হার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন বাজেটে গ্রেডভিত্তিক এই ভাতা বৃদ্ধি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবনযাত্রার ব্যয় ভারসাম্য রাখতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মহার্ঘ ভাতার নতুন হার
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১ জুলাই থেকে প্রথম থেকে নবম গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের মূল বেতনের ১৫ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাবেন। অন্যদিকে, দশম থেকে বিংশ গ্রেডের কর্মীরা পাবেন ২০ শতাংশ হারে এই ভাতা। এই সিদ্ধান্ত অর্থ মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটির যৌথ বৈঠকে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
মহার্ঘ ভাতার এই নতুন হার কার্যকর হলে সরকারের বাড়তি ব্যয় হবে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে বেতন-ভাতা খাতে বরাদ্দ ছিল ৮২ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা, যা আগামী বাজেটে ৯৭ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষ প্রণোদনা বাতিল
উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা ৫ শতাংশ হারে বিশেষ প্রণোদনা সুবিধা পেয়ে আসছিলেন। মহার্ঘ ভাতা কার্যকরের সঙ্গে সঙ্গে এই বিশেষ প্রণোদনা সুবিধা বাতিল হয়ে যাবে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ
সরকারি কর্মচারীদের দাবি ছিল বৈষম্যমুক্ত নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদানের। যদিও সেই দাবি পুরোপুরি পূরণ না হলেও নতুন এই ঘোষণাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকেই। বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাজেটে এই দাবি পূরণ না হলে তারা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
অর্থনৈতিক প্রভাব
বাজেট বিশ্লেষকদের মতে, মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন সরকারি কর্মচারীদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াবে, অন্যদিকে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধির চাপও তৈরি করবে। তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী বলে মনে করছেন অনেক অর্থনীতিবিদ।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২ জুন অর্থউপদেষ্টার বাজেট বক্তব্যে মহার্ঘ ভাতার এই ঘোষণা থাকতে পারে। সবকিছু ঠিক থাকলে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সার্বিক বাজেট অনুমোদন নেওয়ার সময় এই বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন