মালায়ালাম সুপারস্টার আসিফ আলী তার নতুন অ্যাকশন থ্রিলার 'টিকিটকা'-র জন্য যে অকল্পনীয় সংগ্রাম করেছেন, তা শুনলে যে কেউ বিস্মিত হবেন। এই সিনেমাটি শুধু একটি কল্পনাপ্রসূত চিত্রনাট্য নয়, বরং বাস্তব জীবনের এক অবিশ্বাস্য সংগ্রামের কাহিনী। আহত হওয়া, হুইলচেয়ারে বন্দি জীবন, দীর্ঘ পুনর্বাসন প্রক্রিয়া—এসব পেরিয়ে এসে যেভাবে তিনি আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন, তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।
২০২৩ সালে ‘টিকিটকা’-র শুটিং শুরু হয়েছিল একটি হাই-অকটেন অ্যাকশন সিকোয়েন্স দিয়ে। কিন্তু শুটিং চলাকালীন এক দুর্ঘটনা যেন মুহূর্তেই সবকিছু ওলটপালট করে দেয়। লড়াইয়ের প্রশিক্ষণের সময় হঠাৎ গুরুতরভাবে আহত হন আসিফ। মেনিস্কাস ও লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়ার ফলে তাকে দীর্ঘ সময় হুইলচেয়ারে কাটাতে হয়। সেই মুহূর্তগুলো ছিল তাঁর জীবনের সবচেয়ে দুর্বল সময়। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি হাসপাতালের বিছানায় শিশুর মতো কেঁদেছি।”
তবে এখানেই থেমে থাকেননি আসিফ আলী। এই সিনেমার জন্য তিনি তার শরীর এবং মন—উভয়কেই প্রস্তুত করেছেন নতুনভাবে। ১৮ মাস ধরে কঠোর পরিশ্রম করে তিনি ফিরে আসেন ক্যামেরার সামনে, আরও শক্তিশালী হয়ে। নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তোলার এই যাত্রায় তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নিবেদিত। জন ডেনভার চরিত্রের জন্য তাঁর এই আত্মনিবেদন সত্যিই অসাধারণ। আসিফ বলেই ফেলেন, “জন ডেনভারের মতোই, আমিও হাল ছাড়িনি। এবার আমি ফিরে এসেছি আরও শক্তিশালী হয়ে!”
‘টিকিটকা’ শুধুই একটি অ্যাকশন সিনেমা নয়, এটি মালায়ালাম সিনেমায় একটি নতুন উচ্চতা ছোঁয়ার প্রচেষ্টা। পরিচালনায় রয়েছেন রোহিত ভিএস, যিনি এর আগে ‘কালা’-র মতো চলচ্চিত্র দিয়ে আলোচিত হয়েছিলেন। সিনেমাটিতে আছে বড় পর্দার উপযোগী অ্যাকশন, দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো আবেগ এবং এক অনন্য বাণিজ্যিক আবেদন।
২০২৪ সালের শেষ নাগাদ সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আসিফ আলী নিজেই জানিয়েছেন, এটি হতে চলেছে তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা। মালায়ালাম সিনেমার এই সোনালী সময়ে ‘টিকিটকা’ হতে পারে একটি মাইলফলক, যা দর্শকদের মনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে।
আসিফ আলীর এই যাত্রা শুধু একটি সিনেমার প্রস্তুতি নয়—এটি এক অদম্য মানসিকতার প্রতীক। রক্ত, ঘাম এবং অশ্রু দিয়ে লেখা এই গল্প প্রতিটি স্বপ্নদ্রষ্টা ও সংগ্রামীকে নতুন করে অনুপ্রাণিত করবে।
#Tikitaka #Asif_Ali #Malaylam_Cinema #Action_Blockbuster
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন