সর্বশেষ

US Navy: কেন কক্সবাজারে মার্কিন সেনারা? যা বলছে ফায়ার সার্ভিস

মার্কিন সেনাদের সহায়তায় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার প্রশিক্ষণ

 

সম্প্রতি কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে মার্কিন সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়। তবে ফায়ার সার্ভিস ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি একটি পূর্বনির্ধারিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অংশ, যা বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সদস্যদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল।

চার দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ১৮ মে শুরু হয়ে শেষ হয় ২১ মে। এতে কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের ১৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশ নেন। প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগ—বিশেষ করে বন্যা, জলোচ্ছ্বাস এবং ঘূর্ণিঝড়ের সময় দুর্গত মানুষের উদ্ধারপ্রক্রিয়া আরও কার্যকরভাবে পরিচালনার কৌশল শেখানো। মার্কিন সেনাবাহিনীর নয় সদস্যের একটি দল প্রশিক্ষণ পরিচালনায় দায়িত্ব পালন করেন। এই কার্যক্রমটি বাস্তবায়নে সহায়তা করে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস।

প্রশিক্ষণের শেষ দিনে হিমছড়ি সমুদ্রসৈকতের প্যারাসেইলিং পয়েন্ট এলাকায় একটি বাস্তবভিত্তিক সেশন আয়োজন করা হয়, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা শিখে নেওয়া দক্ষতা মাঠপর্যায়ে প্রয়োগ করেন। সেশন শেষে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ তানহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনায় পরিচালিত হয়েছে এবং এটি ফায়ার সার্ভিসের পেশাগত সক্ষমতা বাড়াতে একটি বড় পদক্ষেপ।

এমন সময় যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কিন সেনা সদস্যদের ছবি ভাইরাল হয়ে নানা গুজব ছড়াতে থাকে, তখন ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে জানানো হয় যে, তারা শুধুমাত্র প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে এসেছিলেন এবং কর্মসূচি শেষে তারা নিজ দেশে ফিরে গেছেন। এই স্পষ্ট ব্যাখ্যার ফলে জনমনে সৃষ্টি হওয়া বিভ্রান্তি অনেকটাই কেটে যায়।

বাংলাদেশে মার্কিন সেনাবাহিনীর সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে এমন প্রশিক্ষণ সহযোগিতা নতুন নয়। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া এই উদ্যোগে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৮০ জন কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে ‘মেডিক্যাল ফার্স্ট রেসপন্ডার’ এবং ‘হাই অ্যাঙ্গেল রেসকিউ’ কোর্স বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এসব কোর্স দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামোকে আরও কার্যকর ও টেকসই করে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এমন অভিজ্ঞতা তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে এবং মাঠপর্যায়ে কাজ করার ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এনে দিয়েছে। তারা আশা প্রকাশ করেন, এই ধরনের আন্তঃদেশীয় সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে এবং দেশের দুর্যোগ মোকাবিলা ও উদ্ধারকাজে একটি বড় অবদান রাখবে। মার্কিন দূতাবাসও জানিয়েছে, তারা এ ধরনের উদ্যোগে আগ্রহী এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতা চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন